লিটারবর্ন ডিজিজ (০২)
আজ লিটারবর্ন ডিজিজ রোগগুলোর মাঝে অন্যতম একটি রোগ "কক্সিডিওসিস" এর বিস্তারে লিটারের ভূমিকা ও প্রতিকার নিয়ে কিছুটা ধারনা দেবার চেষ্টা করবো।
coccidiosis |
কক্সিডিওসিস_রোগ_বিস্তারে_লিটারের_ভুমিকাঃ
কক্সিডিওসিস রোগটি আমাদের দেশে এন্ডেমিক হয়ে গেছে। তাই এই রোগটি প্রতিরোধে প্রায় সকল ফিড কোম্পানীই তাদের ফিডে কক্সিডিওস্ট্যাট ব্যবহার করে। এই কক্সিডিওস্ট্যাটের কাজ হলো কক্সির জীবানুর বংশবৃদ্ধি রোধ করা।
কক্সির ওসাইট মুলত লিটারে জন্ম নেয়। যখন লিটার আর্দ্র থাকে অর্থাৎ লিটারে জলীয়বাষ্পের পরিমান ২৫% এর বেশী থাকে তখন কক্সির জীবানু তার জীবনচক্র সম্পন্ন করে এবং বংশবৃদ্ধি করে। যদি কোন কারনে আপনার মুরগী কক্সির ওসাইটগুলো খেয়ে থাকে তবে আপনার মুরগীতে কক্সিডিওসিস হবার সম্ভবনা দেখা দেয়। এখানে বলে রাখা ভাল অল্প পরিমানে কক্সির ওসাইট খেলে কক্সির বিপক্ষে মুরগীর শরীরে ইমিউনিটি তৈরী হয় কিন্তু যখন অনেক বেশী পরিমানে ওসাইট খেয়ে ফেলে তখন কক্সিডিওসিস রোগটি প্রকোট আকারে দেখা দেয়।
ব্রয়লার মুরগী বা সোনালী মুরগী মাঝে মাঝে খাবার ছিটায় ও লিটারে পড়ে থাকা খাদ্য পুনরায় খেয়ে ফেলে। লিটার থেকে খাদ্য তুলে খাবার কারনে লিটার অবস্থিত কক্সির ওসাইটও পেটে চলে যায় এবং রোগ তৈরী করে।
অনেক সময় মুরগীর খাদ্য ও পানিতে লিটার পড়ে। এবং এই লিটার দ্বারা দূষিত খাদ্য ও পানি খাওয়ার ফলেও মুরগীর পেটে কক্সির ওসাইট যেতে পারে এবং কক্সিডিওসিস রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
কক্সিডিওসিস_প্রতিরোধে_করনীয়ঃ
একঃ
লিটার আর্দ্র হতে দেয়া যাবেনা। লিটারে আর্দ্রতা ১৫-২০% এর মাঝে রাখতে হবে। লিটার যেন দলা পাকিয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং নিয়মিত লিটার নেড়ে-চেড়ে দিতে হবে।
দুইঃ
একই ফ্লকের ক্ষেত্রে লিটার ভিজে গেলে পুরো লিটার ফেলে নতুন লিটার না দিয়ে পুরাতন ও নতুন লিটার ৫০%-৫০% অনুপাতে মিশিয়ে দিতে হবে।
একই ফ্লকের ক্ষেত্রে লিটার ভিজে গেলে পুরো লিটার ফেলে নতুন লিটার না দিয়ে পুরাতন ও নতুন লিটার ৫০%-৫০% অনুপাতে মিশিয়ে দিতে হবে।
তিনঃ
লিটার অত্যাধিক ভিজে গেলে ১০ কেজি পাথর চুন/১০০০ বর্গফুট লিটারে ভালমত মিশিয়ে দিতে হবে। এতে লিটারে বিদ্যমান কক্সির ওসাইট ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যায়। (বাতাসে অত্যাধিক আর্দ্রতা থাকলে পাথর চুন ব্যবহার করা উচিৎ হবে না)
লিটার অত্যাধিক ভিজে গেলে ১০ কেজি পাথর চুন/১০০০ বর্গফুট লিটারে ভালমত মিশিয়ে দিতে হবে। এতে লিটারে বিদ্যমান কক্সির ওসাইট ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যায়। (বাতাসে অত্যাধিক আর্দ্রতা থাকলে পাথর চুন ব্যবহার করা উচিৎ হবে না)
চারঃ
খাবার পাত্র ও পানির পাত্র অবশ্যই দড়ি দিয়ে সঠিক নিয়মে ঝুলিয়ে দিতে হবে। তাহলে খাদ্য ও পানি লিটার বা মুরগীর পায়খানা দিয়ে দূষিত হবার সম্ভবনা থাকবে না।
পাঁচঃ
ব্রুডিংএ পেপারের উপড় খাবার ছিটিয়ে দেবার অভ্যাসটা বাদ দিবেন। এই বদঅভ্যাসের কারনে মুরগী লিটারে পড়ে থাকা খাদ্য গ্রহন করে।
ব্রুডিংএ পেপারের উপড় খাবার ছিটিয়ে দেবার অভ্যাসটা বাদ দিবেন। এই বদঅভ্যাসের কারনে মুরগী লিটারে পড়ে থাকা খাদ্য গ্রহন করে।
ছয়ঃ
অত্যাধিক ঘন করে মুরগী পালন করলে কক্সিডিওসিস হবার সম্ভবনা বেড়ে যায়। দেখা গেছে ০.৭ বর্গফুট/মুরগী হিসেবে মুরগী পালন করলে যে ফ্লকে দ্রুত কক্সিডিওসিস দেখা দেয়। তাই খামারে সঠিক ফ্লোরস্পেস মেনে মুরগী তোলা উচিৎ।
অত্যাধিক ঘন করে মুরগী পালন করলে কক্সিডিওসিস হবার সম্ভবনা বেড়ে যায়। দেখা গেছে ০.৭ বর্গফুট/মুরগী হিসেবে মুরগী পালন করলে যে ফ্লকে দ্রুত কক্সিডিওসিস দেখা দেয়। তাই খামারে সঠিক ফ্লোরস্পেস মেনে মুরগী তোলা উচিৎ।
লিটার হলো মুরগীর বিছানা। একে যত ভাল রাখবেন আপনার মুরগী তত ভাল থাকবে।
চলবে...
কিভাবে রক্তআমাশয় ভ্যাকসিন দিবেন তা নিচের ভিডিও দেখে নিতে পারেন।
Post a Comment